১৯৯৭ সালের ১৯ মে কক্সবাজার জেলাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত হওয়ায় বহু পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। তদানীন্তন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐ এলাকা পরিদর্শনে যান। তিনি মানুষের দুঃখ দুর্দশা দেখে অত্যন্ত সহানুভূতিশীল হয়ে পড়েন এবং সকল গৃহহীন পরিবারসমূহকে পুনর্বাসনের তাৎক্ষনিক নির্দেশ দেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৭ সালে “আশ্রয়ণ” নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এ প্রকল্পে মাধ্যমে ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩৮৪০.৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৯৮,২৪৯টি ভূমিহীন-গৃহহীন-অসহায়- ছিন্নমূল পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ২৭৫,৬৫৬ জনকে আয়বর্ধক পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। ১৩৮,৭১৮টি পরিবারকে ঋণ প্রদান করা হয়েছে। সবুজায়নের লক্ষ্যে প্রতিটি প্রকল্পগ্রামে ফলদ, বনজ ও ঔষধি বৃক্ষরোপণ করা হয়ে থাকে। প্রকল্পগ্রামে বসবাসরত উপকারভোগীদের জীবনমান সহজীকরণের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান, সুপেয় পানি ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা রয়েছে।
সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ১ম পর্যায়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পে জুলাই, ১৯৯৭ – জুন, ২০০২ মেয়াদে ৩০০.০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৭,২১০ টি এবং পরবর্তীতে উক্ত প্রকল্পের ধারাবাহিকতায় ২য় পর্যায়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প (ফেইজ–২ ) এ জুলাই, ২০০২-ডিসেম্বর, ২০১০ মেয়াদে ৬০৮.০০ কোটি টাকা ব্যয়ে কোটি টাকা ৫৮,৭০৩ টি ভূমিহীন পরিবার ব্যারাকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
বর্ণিত প্রকল্পের সাফল্য ও ধারাবাহিকতায় জুলাই, ২০১০ - জুন, ২০২২ (সংশোধিত) মেয়াদে ২.৫০ লক্ষ ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল অসহায় পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আশ্রয়ণ–২ প্রকল্পের মাধ্যমে ২৯৩২.৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯২,৩৩৬টি পরিবার পুনর্বাসন করা হয়েছে। (তন্মধ্যে ৪৮,৩২৫ টি ভূমিহীন পরিবার ব্যারাকে পুনর্বাসন করা হয়েছে, ভিক্ষুক পুনর্বাসনসহ “নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ কর্মসূচির” আওতায় ১৪৩,৭৭৭টি পরিবারকে তাঁদের নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবারের জন্য ২৩৪টি টং ঘর ও বিশেষ ডিজানের ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে)।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য
আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় গৃহীত প্রধান প্রধান কার্যাবলী নিম্নরূপঃ
এক নজরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অর্জন (জুলাই ১৯৯৭-জুন ২০১৯)
ক্র নং |
কার্যক্রম |
অর্জিত সংখ্যা |
০১. |
প্রকল্প গ্রামের সংখ্যা |
২০৩০ টি |
০২. |
নির্মিত ব্যারাক সংখ্যা |
১৯৮৭৮ টি |
০৩. |
ব্যারাকে পুনর্বাসিত ভূমিহীন পরিবার সংখ্যা |
১৫৪,২৩৮ টি |
০৪. |
যার জমি আছে ঘর নেই তার নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ |
১৪৩৭৭৭ টি |
০৫. |
তিন পার্বত্য জেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবারের জন্য বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণ |
২১৪ টি |
০৬. |
নির্মিত টং ঘর |
২০ টি |
০৭. |
কবুলিয়ত রেজিষ্ট্রি সংখ্যা |
১,৪১,৪১৮ টি পরিবার |
০৮. |
প্রশিক্ষণ প্রদান |
২,৭৫,৬৫৬ জন |
০৯. |
ঋণ প্রদান |
১,৩৮,৭১৮ টি পরিবার |
১০. |
বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান |
১১০১ টি প্রকল্প গ্রাম |
১১. |
বৃক্ষরোপণ (রোপিত বৃক্ষ সংখ্যা) |
২০,৯০,০০০টি |
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পঃ আশ্রয়ণ প্রকল্পের ধারাবাহিকতায় আশ্রয়ণ-২ (জুলাই ২০১০-জুন ২০২২) নামে একটি প্রকল্পের কার্যক্রম বর্তমানে চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পে চরাঞ্চলে সিআইশিট ব্যারাক ঘূর্ণিঝড়, সিডর, আইলা আক্রান্ত এলাকার জন্য পাকা ব্যারাক, অন্যান্য অঞ্চলের জন্য সেমি-পাকা ব্যারাক এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবারদের জন্য তাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও রীতিনীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিশেষ ডিজাইনের গৃহ নির্মাণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
সংক্ষেপে প্রকল্প পরিচিতিঃ
* উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যমাত্রাঃ ২ লক্ষ ৫০ হাজার ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল পরিবার পুনর্বাসন।
(ব্যারাক ও বহুতল ভবনে ৮০,০০০ ভূমিহীন পরিবার পুনর্বাসন এবং
১৭০,০০০টি গৃহহীন পরিবারকে গৃহ প্রদান)
* মূল ডিপিপি অনুমোদিতঃ ৩১ আগষ্ট, ২০১০।
* সংশোধিত (৩য়) ডিপিপি অনুমোদিতঃ ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯।
* প্রকল্পের মেয়াদঃ জুলাই ২০১০ - জুন ২০২২।
* মোট প্রাক্কলিত ব্যয়ঃ ৪৮২৬১৬.০০ লক্ষ টাকা।
* অর্থের উৎসঃ বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব তহবিল।
লক্ষ্যমাত্রা (জুলাই ২০১৯ – জুন ২০২২)
ক্রঃনং |
কার্যক্রম |
লক্ষ্যমাত্রা |
০১. |
নির্মিতব্য প্রকল্প গ্রামের সংখ্যা |
৪১৮ টি |
০২. |
নির্মিতব্য ব্যারাক সংখ্যা |
৬৪৪৫ টি |
০৩. |
ব্যারাকে পুনর্বাসিতব্য পরিবার সংখ্যা |
৩২,২২৫ টি পরিবার |
০৪. |
যার জমি আছে ঘর নেই তার নিজ জমিতে নির্মিতব্য গৃহ |
২৭,০২৯ টি পরিবার |
০৫. |
তিন পার্বত্য জেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবারের জন্য বিশেষ ডিজাইনের নির্মিতব্য ঘর |
৩৬৬ টি |
০৬. |
কবুলিয়ত রেজিষ্ট্রি সংখ্যা |
৪৪,৪৯৫ টি পরিবার |
০৭. |
প্রশিক্ষণ প্রদান |
৯৬১৭০ জন |
০৮. |
ঋণ প্রদান |
৪৭১৯৫ টি পরিবার |
০৯. |
বৃক্ষ রোপন |
৬,২৪,৯৭৫ টি বৃক্ষ |
১০. |
বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান |
৫৪৬ টি প্রকল্প গ্রাম |
আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন পদ্ধতি ও বিভিন্ন ধাপসমূহঃ